ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সিট অর্জন করা কি খুব কঠিন কাজ?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সিট অর্জন করা কি
খুব কঠিন কাজ?
হ্যা, এটা কঠিন। এটা একটা যুদ্ধস্বরূপ। হাজার হাজার ছাত্রের সাথে যুদ্ধ করে নিজের একটা সিট নিশ্চিত করতে হয়।একটা সিটের জন্য ইউনিটভেদে ২০-৪৫
জন পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বী থাকে।তো বুঝতেই পারছো।
তাই বলে এটা অসম্ভব না।অধ্যবসায়ের সাথে পরিশ্রম করলে এই কঠিন পথটাই বিজয়ের সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যাবে।
তোমাদের এই বয়সে যখন ঢাবির সামান্য একটা
সিট পাওয়ার জন্য পরিশ্রম করতে কষ্ট হয়,তাহলে
শোনো এই বয়সেই (২০ বছর) মার্ক জুকারবার্গ
ফেসবুক প্রতিষ্টা করেছে।
মালালা ইউসূফজাই মাত্র ১৭ বছর বয়সে নোবেল
পেয়েছেন।
ইমাম বুখারী মাত্র ৯ বছরে কুরআন মুখস্থ,১০ বছরে হাদীস মুখস্থ করেন।
মুহাম্মদ বিন কাশিম ১৭ বছর বয়সে সিন্ধু বিজয় করেন।
সুকান্ত ভট্টাচার্য এই বয়সেই কবি হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন।
তোমাদের এত কিছু করতে হবেনা শুধুমাত্র একটা
সিট অর্জন করতে হবে।
এরজন্য সামনে নানা বাধাবিপত্তি আসবে।
সেইসব বাধাবিপত্তি ঠেলেই সামনে এগুতে হবে।
একটু বাধা আসলেই যারা হাহুতাশ করে চেষ্টা
না করে নিজেকে পরাজিত সৈনিকের পাতায়
নিজেই নাম লেখাও তাদের বলবো,
নিচের বিখ্যাত ব্যক্তিদের কাহিনী শুনো
যারা জীবনের বাধাবিপত্তিকে জয় করে
সর্বোচ্চ শিখরে পৌচেছেন।
সুলতান ইলতুৎমিশ ও কুতুবউদ্দিন আইবেক একসময় দাস ছিলেন।এরপর নিজ যোগ্যতায় ভারতের অধিপতি হয়ে ইতিহাসে যথেষ্ট মর্যাদার অধিকারী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
মুসলিমদের স্পেনবিজয়ী সেনাপতি তারিক বিন জিয়াদ
একসময় গোলাম ছিলেন।
স্টিপেন হকিং শারীরিকভাবে অক্ষম হলেও বৈজ্ঞানিক
গবেষনায় তার এ অক্ষমতা বাধা দিতে পারেনি।
আব্রাহাম লিংকন প্রথম জীবনে কাঠুরিয়া ছিলেন। অসামান্য মেধা ও কর্তব্যপরায়ণতা তাকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে উন্নীত করে।
এ দেশেরই আরেক প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট ছিলেন পঙ্গু। শারীরিকভাবে অক্ষম হলেও প্রবল ইচ্ছাশক্তি রুজভেল্টকে একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তুলে ধরে।
ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রেলস্টেশনে
একসময় চা বিক্রি করতেন।
নয়া চীনের প্রতিষ্ঠাতা মাও সেতুং ছিলেন গরিব মুদি দোকানির ছেলে। সীমাহীন দারিদ্র্যের মধ্যে বড় হয়েছেন এই বিপ্লবী নেতা।অর্জিত হয়েছে নিজের কৃতিত্ব ও অধ্যবসায়ের গুণে।
কৃষ্ণ-আফ্রিকার মুক্তি আন্দোলনের এক মহান নাম শ্যাম নাজোমা। স্বাধীন নামিবিয়ার রাষ্ট্রপিতা ও প্রেসিডেন্ট নাজোমা এক সময় ছিলেন সামান্য নাপিত ছিলেন।
ফুটবলের কিংবদন্তি পেলে, ম্যারাডোনা, রোনাল্ডো এ তিনজনই বস্তির ছেলে। এদের ছোটবেলা কেটেছে ছেঁড়া জামা-কাপড় পরে। রোনাল্ডোর বাবা-মা এতই গরিব ছিলেন যে, তার জন্মের পর নাম রেজিস্ট্রি করতে দু’দিন দেরি হয়। শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেট দলের সুপারস্টার জয়সুরিয়ার বাবা ছিলেন একজন জেলে।
ভারতের বিশ্বকাপজয়ী ক্যাপটেইন মাহেন্দ্র সিং ধোনি
একসময় রেলের টিকিট পর্যবেক্ষক ছিলেন।
বিশ্বসাহিত্যের কৃতী পুরুষ ম্যাক্সিম গোর্কি কামারশালা, এমনকি জুতার দোকানেও কাজ করেছেন।
এরকম হাজার হাজার বিখ্যাত ব্যক্তি আছেন যাদের
লক্ষ্যে পৌছাতে বাধাগুলো বাধা হয়ে দাড়াতে পারেনি,বরং এসব বাধা বিপত্তিকে তুঁড়ি মেরে জয়ের সর্বোচ্চ শিখরে পৌছে উঁনারা দেখিয়ে দিয়েছেন যে
লক্ষ্যে পৌছাতে পরিশ্রম ই আসল।
সবাইকে শূন্য থেকেই শুরু করতে হয় আর দিনশেষে
তারাই সফলতা পায় যারা অন্যদের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করে।যদি তুমি ভাবো পরিশ্রম না করে কিছু পেয়ে
যাবে তাহলে তুমি বোকার স্বর্গে বাস করছো।
জীবনে চলতে গেলে বাধাবিপত্তি কমবেশি আসবে সেটাই স্বাভাবিক।কিন্তু দেখার বিষয় হল কে সেইসব
বাধাকে অতিক্রম করে নিজের সফলতার পথে
হাটতে পারে।যারা পারে দিনশেষে তারাই সফল।
মনে রাখবা ইতিহাস বিজয়ীদের পক্ষে।
পরাজিতদের কেউ মনে রাখবেনা।
তাই এগিয়ে যাও। সাফল্য আসবে ইনশাআল্লাহ।
দেখা হবে বিজয়ে।

No comments

Powered by Blogger.